কম খরচে বান্দরবান ভ্রমণের টিপসবারমুডা ট্রায়াঙ্গেল কোন সাগরে অবস্থিত এবং পৃথিবীর ইতিহাসে আরাল সাগরের বয়স এর রহস্যময় ঘটনা গুলো সম্পর্কে কিছু প্রচলিত এবং বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণগুলো জানবো এবং অতীতে উজবেক স্থান এবং কাজাক স্তানের মধ্যে ছিল এক বিশাল জলাশয় , যার নাম আরাল সাগর নামে সাগর হলেও এটি এটি মূলত সল্টলেক বা লবণাক্ত পানির রদ ছিল।
পোস্ট সূচিপত্রসাবেক সোভিয়ত ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ মরুভূমির মধ্যে তুলা চাষ করতে গিয়ে আরাল সাগরকে পরিকল্পিত ভাবে ধ্বংস করেছে।বর্তমানে আরাল সাগরের কোনো অস্তিত্ব নেই, এখন সেখানে আছে আরাল মরুভূমি। বরফ যুগের পর উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে পৃথিবীর বিস্তৃত অঞ্চলের বরফ গলে যায় আর সে সময় প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিও হতো।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আরাল সাগর সম্পর্কে বিস্তারিত এবং বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল কোন সাগরে অবস্থিত এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং আরাল সাগরের উৎপত্তি এবং বিলুপ্তি হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।অনেক কিছু জানতে পারবেন।আরাল সাগর কি কোথায় এর উৎপত্তি এ বিষয়গুলো
জানার অনেকের মনের মধ্যে কৌতুহল আছে, এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আজকে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব এবং আপনাদের সঠিক তথ্যগুলো দিতে পারব।পৃথিবীর ইতিহাসে আরাল সাগরের বয়স কত বছর এই তথ্য গুলো জানা সহ আড়াল সাগরের আরো অজানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
পৃথিবীর ইতিহাসে আরাল সাগরের বয়স কত বছর
প্রকৃতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অসচেতনতা অবহেলা এবং ব্যর্থতার পরিণতি যে মানুষের জন্য কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।,আরাল সাগর যার জীবন বৃত্তান্ত আপনাদের জানাতে আজকের এই আর্টিকেল টি লিখা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া সাগরটি একসময়
মধ্য এশিয়ার কাজাকস্তান এবং উজবেকস্থান এই দেশ দুটোর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল। প্রায় ১২ হাজার বছর আগে সৃষ্ট এই আরাল সাগর বিংশ শতকের মধ্যভাগে শুকিয়ে যাওয়া শুরু করে।এই অঞ্চলের বাকি অঞ্চলের মতো আরাল সাগর ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সোভিয়ত সাম্রাজ্যের অংশ ছিল।
আরো পড়ুনঃকিভাবে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করবেন
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য অনুযায়ী ওই সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট সরকারের লোভ এবং অদূরদর্শিতায় মানব ইতিহাসের অন্যতম মর্মান্তিক এই দুর্যোগের সৃষ্ট হয়।ভূবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী আনুমানিক ৩০ লাখ বছর আগে মধ্য এশিয়ার
বর্তমান কাজাকস্তান এবং উজবেক স্থান সীমান্তে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এর ফলে আক্রান্ত এলাকায় বিস্তীর্ণ একটি ডিপ্রেশন বা নিম্ন অঞ্চলের সৃষ্টি হয়। এর প্রায় পাঁচ লাখ বছর পর আনুমানিক ২৫ লাখ বছর আগে শির দরিয়া নামক স্থানীয় একটি নদী ওই নিম্নচলে একটি রদের সৃষ্টি করেছিল। কয়েক লাখ বছর পর নদীর গতিপথ পাল্টে গেলে,
প্লায়োসিন যুগে সৃষ্ট সেই রথটি শুকিয়ে যায়। বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী আনুমানিক ১ লাখ বছর আগে এখানে প্রথম মানব বসতি স্থাপিত হয়েছিল। তবে বিজ্ঞানীদের মতে সেই বসতি স্থাপনকারীরা আধুনিক মানুষের মতো হোমো স্যাপিয়ান্স প্রজাতির সদস্য ছিলেননা।এটা সম্ভবত আধুনিক মানুষের পূর্বসূরী হোমো ইরেকটাস প্রজাতির বংশধর ছিলেন।
গত শতকে জর্জিয়ার দামিনেছি এলাকা থেকে এমন একজন মানুষের কঙ্কাল উদ্ধার করেছিল, যার সুবাদে বিজ্ঞানীরা এ জাতীয় প্রাণীর নাম রেখেছেন দামিনেসি মানুষ এবং এর প্রায় ১২ হাজার বছর আগে আমু দরিয়া নামক আরেকটি নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করায় এই নিম্নানচলে নতুন করে একটি জলাশয়ের জন্ম হয়।
কালের পরিক্রমায় সে জলাশয়ের আয়তনটি দাঁড়ায় আটষট্টি হাজার বর্গ কিলোমিটার বা প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার বর্গমাইলে, অর্থাৎ আয়তনের হিসেবে বিশ্বের চতুর্থতম হ্রদের খেতাবটি এই আরাল সাগরের দখলে ছিল। স্থানীয় ভাষায় আড়াল শব্দের অর্থ দ্বীপকুঞ্জ, তাই এই জলাশয়ের বাংলা নাম দিপ কুঞ্জের সাগর।
আরো পড়ুনঃ সৌরজগৎ সম্পর্কে অজানা তথ্য
এক সময়ে এই জলাশয় ছোট বড় বিভিন্ন আকারের প্রায় ১১০০টিরও বেশি দ্বীপের অস্তিত্ব ছিল। এই কারণেই স্থানীয়রা এই জলাশয়টির এরকম নাম দিয়েছিলেন।ইতিহাস অনুযায়ী বিশ্বজয়ী বীর দি আলেকজান্ডার দি গ্রেড বিস্তীর্ণ এ জলাশয়ের দক্ষিণ তীরে দাঁড়িয়ে ভেবেছিলেন যে তিনি পৃথিবীর শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছেন। চীনের টাং বংশের শাসন আমলে,
এই জলাশয়ের পূর্ব অংশটা চৈনিক সাম্রাজ্যের পশ্চিম সীমানা হিসেবে গণ্য করা হতো। উনবিংশ শতকে এসে এই জলাশয় সংলগ্ন পুরো এলাকা রুশ সাম্রাজ্যের দখলে চলে যায়। নিজেদের আধিপত্য অক্ষণ্য রাখতে এই সাগরের তীরে অবস্থিত এ্যারালস্ক শহরে দুভেত্ত নৌ ঘাঁটি স্থাপন করে রাশিয়া। ১৮৪৭ সালে ঐ নৌহাটি স্থাপনের পর সেখানে।
যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর কাজটা রুশ বাহিনীর জন্য বিশাল এক চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছিল। আরাল সাগর এ্যান্ডরেজ জলাশয় হওয়ায় নৌপথে জাহাজগুলো পাঠানোর কোন সুযোগ ছিল না। তাই উড়াল নদীর তীরে অবস্থিত ওরেনবাগ বন্দরে জাহাজ গুলোর বিভিন্ন অংশ খুলে ফেলা হয় তারপর বিচ্ছিন্ন অংশ গুলোকে স্থলপথে এ্যারালস নৌঘাঁটিতে
নিয়ে যাওয়া হতো।রাশিয়ায় তখনও রেল ইঞ্জিনের প্রচলন না হওয়ায় এই কাজে কয়েকশো উট ব্যবহার করা হয়েছিল। এভাবে পরবর্তী দুই বছরে মোট চারটি যুদ্ধজাহাজ আরাল সাগরে স্থানান্তর করেছিল রুশ নৌবাহিনী এ সময় আরাল সাগর তীরের জনপদ গুলোই মাছ শিকার করাই ছিল জীবিকা উপার্জনের প্রধান উপায় নাম ।সাগর হলেও
আরো পড়ুনঃ কম খরচে বান্দরবান ভ্রমণ টিপস
এ জলাশয় সাধারণত মিষ্টি পানির মাছ বেশি পাওয়া যেত, কারণ এর পানির লবণাক্ততা সমুদ্রের পানির তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ ছিল সমুদ্রের প্রতি লিটার পানিতে গড়ে ৩৫ গ্রাম করে লবণ থাকে ,আর আড়াল সাগরের প্রতি লিটার পানিতে এর পরিমাণ মাত্র ১১ গ্রাম,তাই মিষ্টি পানির মাছ এই সাগরে বেশি ধরা পড়তো সেই মাছ বিক্রি করে
আরাল সাগরের তীরবর্তী মানুষগুলো তাদের জীবন ধারণ করতেন। সব মিলিয়ে রুশ সম্রাটের প্রজা হিসেবে আরাল সাগরের উপকূলীয় মানুষজনের জীবন ভালোই কাটছিল। দুর্ভাগ্যবশত বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা সপরিবারে সম্রাটকে হত্যা করে রাশিয়ার শাসন ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছিল। ভ্লাদিমির লেলিন এর
নেতৃত্বাধীন দখলকারীরা ভূতপূর্ব সাম্রাজ্যের নাম রাখে সোভিয়েত ইউনিয়ন। লেলিনের শাসনামলে সোভিয়েত অভিজাত মহলে আরাল সাগরের প্রতি এক ধরনের বিদ তৃষ্ণা তৈরি হয়। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী আরাল সাগরের তীরে অবস্থিত জনপদের মাছ শিকারি সাদামাটা মানুষগুলো নিজেদের খরচ মিটিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থনীতিতে খুব একটা অবদান রাখতে ব্যর্থ হচ্ছিল।
বিভিন্ন পর্যায়ে নীতি নির্ধারকরা এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের কি করা যায় তা নিয়ে মাথার ঘাম ঝরানো শুরু করে। লেলিনের মৃত্যুর পর সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষমতা গ্রহণ করে জোসেফ স্টালিন, তার শাসন আমলের শেষভাগে আরাল সাগরের উপকূলীয় এলাকায় তুলা চাষ শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমু ও শির দরিয়া নামক নদীর
বিভিন্ন স্থানে বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আরাল সাগরের পানি সরবরাহকারী এই নদী দুটির পানি গন্তব্যে পাঠানোর বদলে ওই পথ গুলোর মাধ্যমে তুলা খেতের সেচের কাজে ব্যবহৃত হতো। সোভিয়েত সরকারের তত্ত্বাবধানে আরাল সাগরের উপকূলে ৫০ লাখ একর এলাকা জুড়ে তুলার খামার গড়ে তোলা হয়েছিল।বিস্তীর্ণ এই এলাকায় সেচের
পানি সরবরাহ করতে গিয়ে ১৯৬০ সালে আমু এবং শির দরিয়া নদীর দুটির মোহনা শুকিয়ে যায়।এর পরিণতি হিসেবে আরাল সাগরের উচ্চতা ধীরে ধীরে কমে যাওয়া শুরু করে ।এছাড়া পানি প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আরাল সাগরের লবণাক্ততা ও বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে, স্বাভাবিকের থেকে প্রায় দশ গুণ বেড়ে এক পর্যায়ে আরাল সাগরের
প্রতি লিটার পানিতে লবণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১১০ গ্রামে। প্রকৃতির দেয়া এই অশালী সংকেত গুলো আমলে না নিয়ে তুলা চাষ অব্যাহত রাখে সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকার এই খামারগুলো থেকে সংগ্রহীত তুলা বাজার জাতের উপযোগী করে তুলতে প্রয়োজনীয় কারখানাগুলো উপকূলীয় এলাকায় স্থাপন করা হয়েছিল। এসব কারখানার বর্জ্য
আরাল সাগরে ফেলায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে ওঠে।এরপর মরার ওপর খাড়ার ঘা এর মত আরাল সাগরের একটি দ্বীপে জৈব অস্ত্র নির্মাণের লক্ষ্যে গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করে সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকার। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গনের পর প্রকাশিত নথিপত্র অনুযায়ী ওই গবেষণা কেন্দ্রে বিবনিক প্লেগের জীবাণুকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা চলছিল।
আরও পড়ুনঃ যৌবন ধরে রাখতে সরিষা ফুলের মধুর উপকারিতা
একদিকে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, অন্যদিকে কারখানার বর্জ্যর কারণে পানি দূষণ সব মিলে গত শতকের আশির দশক নাগাদ আরাল সাগর থেকে সব প্রজাতির মাছ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। ততদিনে একসময়ের বিস্তীর্ণ জলাশয় টি ছোট ছোট চারটি জলাশয়ে পরিণত হয়েছে অবশেষে ২০০০ সাল নাগাদ পুরো জলাশয় টি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
এর ফলে আরো এক বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় এখানে বসবাসকারী হতভাগ্য মানুষগুলো। জলাশয়ের তলদেশে পতিত বর্জ্য গুলো বেরিয়ে আসায় বায়ুমন্ডলের তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যার ফলে এখানে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেতে থাকে। সর্বোপরি জৈব অস্ত্র নিয়ে গবেষণা চালানো সে দ্বীপ
এবং মূল ভূখণ্ডের মধ্যে দেয়াল হিসেবে বিদ্যমান সাগরের অস্তিত্ব না থাকায় ওই গবেষণা কেন্দ্রের জীবাণুবাহী ইঁদুরগুলো উপকূলীয় জনপদে ছড়িয়ে পড়ে। যার ধারাবাহিকতায় প্রায়ই বিউবনিক প্লেগ সেখানে মহামারী আকারে দেখা দেয় এছাড়া জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী এই এলাকায় শিশু মৃত্যুর হার আফ্রিকার অনেক দেশের চাইতেও বেশি।
সব মিলিয়ে একসময়ের আরাল সাগর এখন শুধু জং ধরা জাহাজের সমাধি ছাড়া আর কিছুই নয়। আর এর উপকূলে অবস্থিত একসময়ের প্রাণবন্ত জনপদ গুলি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা প্রকৃতির সুরক্ষা নিশ্চিতে মানুষের অবহেলা এবং ব্যর্থতা বিশ্বের আরো অনেক অঞ্চলেই এমন বীরান ভূমির সৃষ্টি করতে পারে।
তবে পরিস্থিতির মোড় ফেরানোর সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি, ২০০৫ সালে কাজাকস্তানে অবস্থিত সাবেক আরাল সাগরের উত্তর প্রান্তটি সংরক্ষণে এক যৌথ প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক এবং কাজাক সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয় এই বাঁধের সুইসগেট গুলোর মাধ্যমে আমু দরিয়ার পানি আরাল সাগরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ধারণা করা হয়েছিল, এই প্রকল্পের মাধ্যমে এক দশকের মধ্যে আরাল সাগরের উত্তরের অংশটুকু তার সাবেক চেহারা ফিরে পাবে।কিন্তু সংশ্লিষ্টদের হতভাগ করে দিয়ে মাত্র সাত মাসে জলাশয় টির পানির উচ্চতা সাড়ে তিন মিটার বা ১০ ফুটের বেশি বৃদ্ধি পায়। ধীরে ধীরে সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ উদ্ভিদ ফিরে আসতে শুরু করে।
সব মিলিয়ে এই আরাল সাগরের জীবন বৃত্তান্ত মানুষ এবং প্রকৃতির মাঝে বিদ্যমান সম্পর্কের কথায় মনে করিয়ে দেয় একটি অদূরদর্শী সিদ্ধান্তই যেমন বিশাল সাগর শুকিয়ে ফেলতে পারে তেমনি আবার এর উত্তর প্রান্ত সংরক্ষণ সূচিত প্রকল্পটির সাফল্য দেখে বোঝা যায় প্রকৃতির সুরক্ষায় মানুষের সামান্য চেষ্টায় যথেষ্ট।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল কোন সাগরে অবস্থিত
এই পৃথিবীতে এমন একটি জায়গা আছে যেখানে কেউ ভুল করে চলে গেলে আর ফিরে আসে না। আর এই জায়গাটি হল আটলান্টিক মহাসাগর ও বারমুডা আইল্যান্ড এবং মিয়া মিয়ার মধ্যে ত্রিভুজ আকৃতির একটি জায়গা,গোটা বিশ্ব যাকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নামে চিনে থাকে। কিন্তু বাস্তবে এই ত্রিভু আকৃতির সীমানা কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত তার কেউই সঠিকভাবে জানে না।
আর এই কনফিউশনের জন্য হাজারো জাহাজ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। এপর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি জাহাজ এবং দুইশোরও বেশি ইয়ারক্রাফ হারিয়ে গেছে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে। এমনকি ওই জাহাজগুলোর ধ্বং ধ্বংসাবশেষ গুলো খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেকে বলে থাকে জায়গাটি এলিয়েনরা কন্ট্রোল করে থাকে এবং সামুদ্রিক দানবের রাজত্ব চলে।
আরো পড়ুনঃ বান্দরবান ভ্রমণে যে ভুলগুলো করবেন না
যেমন বিশালাকৃতির অজানা কোন প্রাণী যার উপর দিয়ে কেউ যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়। অবাক করা বিষয়টি হল বর্তমান টেকনোলজি এতটাই উন্নত যে আমরা পৃথিবীতে বসে বসেই অন্য গ্রহের সুক্ষ সুক্ষ জিনিসও দেখতে সক্ষম হয়েছি, কিন্তু পৃথিবীর মধ্যে অবস্থিত ছোট জায়গা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে হারিয়ে যাওয়াজাহাজের ক্ষুদ্রতম অংশ
খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি সেখানে হারিয়ে যাওয়া মৃত মানুষদের মরদেহ খুঁজে বের করতেও ব্যর্থ হয়েছে, এমন কোথাও প্রচলিত আছে হতে পারে এই ছোট্ট জায়গাটি পৃথিবীর কোন অংশ নয়।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল সম্পর্কিত তথ্য
আজকের এই আর্টিকেলটিতে জানতে পারবেন,এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল সম্পর্কিত তথ্য। ১৯৭০ সালের ৪ই ডিসেম্বর পাইলট ব্রুস গ্যারগন বিজনেস এর জন্য তার পার্টনারের সঙ্গে অ্যান্ড্রুস আইল্যান্ড থেকে ফ্লোরিডা কস্ট যাওয়ার জন্য বিমান যাত্রা শুরু করে। সে সময় ওই জায়গাটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতো ছিল না তাছাড়া ওই ব্রুষ গ্যারগণের কাছে ওই জায়গাটি নতুন কিছু ছিল না।
কারণ সে ওই রুট দিয়ে অসংখ্য বার যাতায়াত করেছে তাই ব্রুস গ্যারগন কোন চিন্তা ছাড়াই সামনের দিকে এগিয়ে চলছে। কিন্তু সে জানতো না তার এই যাত্রাটি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে, যখনই ব্রুশ যাত্রা শুরু করে তখনই একটি আজব ঘটনা ঘটে।তার সামনে প্রচন্ড ঝড় ওঠে এবং চারিদিকে কালো মেঘে আচ্ছন্ন বলেয়ে পড়ে যদিও ব্রুস গ্যারগন এটিকে সাধারণ একটি ঝড় মনে করে এবং
সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল এবং সবকিছু পারফেক্ট ছিল বলে মনে করছিল। কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়নি কিন্তু যখনই প্লেনটি ১১ হাজার ৫০০ ফিট উপরে ওঠে তখন আবারও একবার সেই কালো মেঘ প্লেনের সামনে দেখা দেয় এবং মেঘটি দেখতে একটি টানেলের মত প্যাচানো ছিল। হঠাৎ করে এই মেঘটি তার সামনে চলে আসার কারণে
সে রিয়েক্ট করতে পারেনি। আর সে সোজাই সে তখন এই মেঘ টির মধ্যে প্রবেশ করে যখনই ব্রুস গ্যারগন এই মেঘ আকৃতির টানেল এর মধ্যে প্রবেশ করে তখন তার চারিপাশে কালো অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়।সবকিছুই ব্রুস গ্যারগনের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছিল।এ ধরনের ভয়ানক মেঘ সে পূর্বে কখনো দেখেনি কারণ এর আকার সাধারন ঝড়ো মেঘের চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন ছিল।
এরপর সাদা আলোর ফ্লাশ হতে থাকে এটা অনেকটাই বিদ্যুৎ চমকানোর মতোই ছিল কিন্তু কোন শব্দ ছিল না। আর চতুর্দিকে কোন বৃষ্টিপাত হচ্ছিল না তাছাড়া ওই আলো গুলো সাধারণ আলোর চেয়ে বেশি উজ্জ্বল ছিল, আর ওইগুলো জালের মতো তার প্লেনের চারিপাশে ছড়িয়ে পড়ছিল প্রায় বিশ মিনিট ধরে ব্রুস গ্যারগন প্লানটি ওই মেঘগুলোর মধ্যে দিয়ে উড়িয়ে যাচ্ছিল,
হঠাৎ করে সে বুঝতে পারে এটি সেই মেঘ যেটি সে ১১ হাজার ৫০০ ফুট উপরে দেখেছিল পার্থক্য শুধু এটাই যে এই আকৃতি টানেল এর মত প্যাচান। কিন্তু সে তখনও প্যাঁচানো মেঘের টানের এর মধ্যে দিয়েই যাচ্ছিল এবং সে খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিল এবং সে তার পরিবারের কথা ভাবছিল এবং ভাবছিল আজকের দিনটি হয়তো তার জীবনের শেষ দিন হতে চলেছে,
এবং সে ভেবে নিয়েছিল এই অবস্থা থেকে আর কোনদিন সে বের হতে পারবে না।কারণ তার সামনে ওই চ্যানেল থেকে বেরিয়ে আসার কোন রাস্তা চোখে পড়ছিল না। কিন্তু তারপরক্ষণ এই একটি আজব ঘটনা ঘটে যায় ব্রুস গ্যারগনের সামনের দিকে আলো জ্বলে ওঠে আর ব্রুস গ্যারগন ভাবতে থাকে এটিই হলো টানেলের শেষ মাথা ব্রুস গ্যারগন এই ভেবে তার
প্লেন টি সামনের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু সে যখন আলোর মেইন পয়েন্টে পৌঁছায় তখন আলোটি যেন সংকুচিত হয়ে যায়, আর তার প্লেনের নেভিগেশন সিস্টেম অদ্ভুত আচরণ করতে থাকে এবং কম্পাস নিজে থেকে বারবার দিক পরিবর্তন করতে থাকে এবং প্লেনের সবকিছু অটোমেটিক ভাবে কন্ট্রোল হতে থাকে।ব্রুস গ্যারগনের মনে হচ্ছিল
বিমানটি অন্য কেউ কন্ট্রোল করছে। তখন ব্রুস গ্যারগন প্লেনটিকে অনেক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে থাকে কিন্তু কোন কিছুতেই কোন কাজ হচ্ছিল না অটোমেটিক ভাবেই বিমানটি চলতে থাকে আর চিন্তার বিষয় হলো তখনও তার প্লেন্টি ওই আলোর দিকেই অগ্রসর হচ্ছিল প্রায় বিশ মিনিট ধরে বুশের প্লেন্টটি এভাবেই হেলদে তুলতে থাকে,
আর তখনো সে ওই প্যাঁচানো মেঘের মধ্যে দিয়েই উড়তে থাকে তারপর হঠাৎ এক ধাক্কায় বিমানটি ওই মেঘের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু এই বিশ মিনিট ব্রুস গ্যারগন সাথে যা ঘটেছিল তা পৃথিবীতে কখনো ঘটা সম্ভব নয় ওই রহস্যময় মেঘ থেকে বেরিয়ে আসার পর বুস নিজেকে অনেকটাই হালকা অনুভব করে ঠিক যেমনটা মহাকাশ যাত্রীরা অনুভব করে থাকে।
যখন তারা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি থেকে বেরিয়ে যায় এবং এরপর সব কিছুই নরমাল হয়ে যায় তখন প্লেনের সব যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক মতোই কাজ করছিল। ব্রুস গ্যারগন জানতই না ওই প্লেনটি ২০ মিনিট ধরে কোথায় উঠছিল তাই সে গ্রাউন্ড কন্ট্রোলারের সাথে যোগাযোগ করে কিন্তু তখন গ্রাউন্ড কন্টোলার বুশের প্লেনের লোকেশন ট্র্যাক করে,
তারা সেখানে বুশের প্লেনের কোন অস্তিত্বই দেখতে পাইনি কিছুক্ষণ পরে কন্ট্রোল রুম থেকে জানা যায় বুসের বিমান ইতোমধ্যেই তাদের ইয়ার স্পেস অতিক্রম করে মায়ামি ইয়ার স্পেস এর দিকে চলে যাচ্ছে কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব কারণ বুশের এই যাত্রাটা ছিল ৪০০ কিলোমিটারের পথ আর এই যাত্রা টির জন্য সময় লাগে ৯০ মিনিট,
কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ৪৭ মিনিট সময় অতিক্রম করেছে আর যে বিমানটিতে করে যাত্রা করছিল তার সর্বোচ্চ গতি ছিল ২৯০ কিলোমিটার পার ঘন্টা অর্থাৎ ৪৭ মিনিটে ৪০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করা অসম্ভব।তাই ব্রুস গ্যারগন মনে করেন কন্ট্রোল রুম তাকে ভুল ইনফরমেশন দিয়েছেন কিন্তু তারপরে ব্রুস গ্যারগনের সব ডাউট পানির মত পরিষ্কার হয়ে যায়,
আসলেই তো গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুমের information সঠিক ছিল এবং তার সামনে মায়ামি এয়ারপোর্ট দেখা যাচ্ছিল অবশেষে সে মায়ামি এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করে। আর মায়ামি এয়ারপোর্ট এর ল্যান্ড করার পর ব্রুস গ্যারগন যখন তার প্লেনের ফুয়েল চেক করে তখন সে তার নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিল না কারণ ৪০০ কিলোমিটার পথ যাত্রা করার জন্য
যতটুকু ফুয়েল শেষ হওয়ার কথা তার অর্ধেক ফুয়েল এখনো ট্যাংকে রয়েছে, অর্থাৎ প্লেন্টি মাত্র ২০০ কিলোমিটার যাত্রা করে মায়ামি এয়ারপোর্টে গিয়ে পৌঁছায় এসব ভেবে তখন সে ভীষণই চিন্তায় পড়ে যায় কারণ যেখানে অ্যান্ড্রস আইল্যান্ড থেকে মায়ামি এয়ারপোর্টের দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার সেখানে সে কিভাবে ২০০ কিলোমিটার যাত্রা করেই পৌছালো?
এই রহস্যটির সমাধান পেতে অনেক প্রফেসরের সঙ্গে আলোচনা করে কিন্তু কেউ তার সঠিক উত্তর দিতে পারেনি, উল্টো তারা বসকে বলতে থাকে তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে ব্রুস গ্যারগনের সাথে কেন এমনটা ঘটলো তার উত্তর কেউ দিতে পারেনি। তবে আমরা আজকে তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করব এবারের এই কথাগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ুন,
আজ পর্যন্ত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে কয়েকশো প্লেন হারিয়েছে এবং কয়েক হাজার জাহাজ নিখোঁজ হয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি বাদে বাকি প্ল্যানগুলোর কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং পাওয়া যায়নি কোন যাত্রীর মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি যার কারণে এই জায়গাটি নিয়ে অনেকের জল্পনা কল্পনা তৈরি হয়েছে অনেকে বলে থাকেন এই জায়গাটি সামুদ্রিক দানবেরা কন্ট্রোল করে থাকেন।
এই জায়গাটিকে নিয়ে অনেকের অনেক কৌতুহল রয়েছে ব্রুস গ্যারগনের ওই ঘটনার পেছনে একটি থিওরি লেখা হয় যেখানে বলা হয় ব্রুস গ্যারগনের প্লেনের পিছনে ডার্ক এনার্জির হাত রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে ডার্ক এনার্জি হল এমন শক্তি যা ব্ল্যাক হোলের মত অন্ধকার টানেল বানিয়ে থাকে, যার মধ্য দিয়ে কয়েক লাখ কিলোমিটার রাস্তা কয়েক মিনিটে পার হয়ে যাওয়া যাবে।
ব্রুস গ্যারগন হয়তো এমনই কোন টানেল এর মধ্যে প্রবেশ করেছিল আর সেখান থেকে সে জীবিত বের হয়ে আসতেও সমর্থ্য হয়েছিল আর এই কারনে সে ৪০০ কিলোমিটার পথ মাত্র ৪৭ মিনিটে অতিক্রম করতে পেরেছে। ব্রুস গ্যারগন একমাত্র ব্যক্তি যে কিনা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে আর তার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে
অনেক হলিউড মুভি ও তৈরি করা হয়েছে। আর ডাক এনার্জি এবং বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল কে অবিশ্বাস করার কিছুই নেই কারণ পৃথিবীতে এমন কিছু আছে যা বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারেনি, যেমন আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় আপনার শরীরে আত্মা কোথায় আছে এবং আপনার আত্মার ওজন কত।
এটার উত্তর কোন বিজ্ঞানের কাছেই নেই কিংবা আপনার কাছেও নেই মানুষের আত্মা বা জীবন কোথায় আছে কতটুকু ওজন তাকে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই বলতে পারবে।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল অজানা রহস্য
রহস্য ঘেরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে জল্পনা কল্পনা শেষ নেই মানুষের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল অজানা রহস্য আর এই রহস্য উদঘাটনের জন্য বিস্তার গবেষণা কৌতূহল এবং জানার ইচ্ছা এখনো চলমান রয়েছে।সোশ্যাল মিডিয়া পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেল গুলোর সুবাদে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে গল্পের অভাব নেই আর এসব গল্পের কারণেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল
-পৃথিবীর মানুষের কাছে এক রহস্যের নাম।কিন্তু এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের অবস্থান কোথায় এবং এর রহস্যময় হয়ে ওঠার কারণটা কি তা এসব কথা জানাতেই আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নামে পরিচিত নামের সাথে ট্রাইংগেল বা ত্রিভুজ থাকার কারণ?
এই এলাকার ব্যক্তি তিন দিকে তিনটি স্থলভাগ দ্বারা চিহ্নিত বারমুডা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা এবং ক্যারিবিয়ান সাগরে অবস্থিত পোয়েটেরিকো এই তিনটি স্থানকে যুক্ত করলে যে ত্রিভুজ অংশটি পাওয়া যায় এবং তার নামই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল। পত্রিকা সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী এ এলাকায় একাধিক জাহাজ এবং উড়োজাহাজ আচমকা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আর এই রহস্যময় এই বিষয়টি প্রথম সংবাদের শিরোনামে আসে ১৯৯৫ সালে ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসে ফ্লোরিডা ভিত্তিক দৈনিক পত্রিকা মিয়ামিহেরাল্ড প্রথম বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নামটি ব্যবহার করে। অ্যাড ওয়ালভেন্ট উকিল জন্স নামক এক প্রতিবেদকের লেখা ওই সংবাদের বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এলাকায় হারিয়ে যাওয়া একটি একটি জাহাজ
এবং কয়েকটি উড়োজাহাজের কথা তুলে ধরা হয়। তবে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলকে আলোচিত করে তোলেন মার্কিন সাংবাদিক ভিনসেন ক্যারিস। প্রথমে তিনি এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন তারপর ইনভিজিবল হরাই জিন্স নামক পূর্ণাঙ্গ একটি বই লিখে বসেন আর তারপরেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য মানুষের কল্পনার জগতে দখল করে বসে।
জন্সের সেই প্রতিবেদনে যে জাহাজটি হারিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল তার নাম ইউএসএ সাইক্লোপস ওয়েস্টটেন্ডিজের বারবাদিস দ্বীপ থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর ১৯১৮ সালের ৪ই মার্চ মার্কিন নৌবাহিনীর এই পণ্যবাহী জাহাজটি বেমালুম গায়েব হয়ে যায়। দুর্ঘটনার সময় জাহাজটিতে থাকা তিন শতাধিক নাবিক বা জাহাজটির ধ্বংসাবশেষের
কোন চিহ্ন এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর কারণ হিসেবে অনেকেই অনেক ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন, তবে অধিকাংশের দাবি সেই সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলায় জার্মান কোন ইউরোটের হামলাতেই ইউএসএ সাইক্লোভস ডুবে যেতে পারে, অবশ্য জার্মানি বরাবরই এই দায় অস্বীকার করে এসেছে তাছাড়া আবহাওয়াবিদদের কাছে এই
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের হারিকেন এ্যালি বা ঘূর্ণিঝড়ের পথ আটলান্টিক মহাসাগরের সৃষ্ট প্রায় সব ঘূর্ণিঝড়ই এই পথ অতিক্রম করে। ফলে এখানে সমুদ্র আচমকায় উত্তাল হয়ে উঠতে পারে যা অতিক্রম কারি জাহাজগুলোকে বিপদের মধ্যে ফেলতে পারে আরো একটি থিওরি অনুযায়ী সাইক্লোভস জাহাজটিতে থাকা পণ্য গুলি ওই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ সরিষা ফুলের মধুর উপকারিতা এবং এর দাম
দুর্ঘটনার সময় জাহাজের প্রায় ১১ হাজার টনের মত ম্যাঙ্গানিজ রাখা ছিল যা আগুনের সংস্পর্শে এলে বিস্ফোরিত হয়ে বিশাল অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হতে পারে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের সংঘটিত পরবর্তী দুর্ঘটনাটি আরো বেশি রহস্যময় বিশ্বব্যাপী ঘটনাটি ফ্লাইট নাইনটিন নামে পরিচিত ১৯৪৫ সালের ৫ই ডিসেম্বর ফ্লোরিডার ফওড লটাডেল
বিমান ঘাঁটি থেকে উড়ে যাওয়া অ্যাভেঞ্চার মডেলের পাঁচটি টর্পেডো বোম্বাট জঙ্গি বিমান, মহড়া দেয়ার সময় গায়েব হয়ে যায়। নিখোঁজ হওয়ার সময় বিমানগুলো বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের আকাশ সীমা অতিক্রম করছিল আর শেষ মুহূর্তে পাঠানোর রেডিও বার্তা অনুযায়ী বিমানগুলোতে থাকা দিক নির্ণয়ের জন্য থাকা সরঞ্জাম গুলি সে সময় কাজ করছিল না।
আরো আটকে ওঠার মত ঘটনা হলো বিমানগুলো নিখোঁজ হওয়ার পর মার্কিন নৌবাহিনী দুর্ঘটনা স্থানে তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান চালায় সেই উদ্ধারে অংশ নেয়া ম্যারিনার মডেলের তল্লাশি বিমানবারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের আকাশ সীমানায় অবস্থানরত থাকা অবস্থায় নিখোঁজ হয়।ওই সময় ম্যারিনার মডেলের বিমানটিতে ১৩ জন ক্রু মেম্বার ছিলেন।
আর এরপরই মূলত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে মানুষের জল্পনার কল্পনা তুঙ্গে ওঠে পরবর্তীতে অবশ্য নৌ বাহিনীর চালানো এক তদন্তে জানা যায় ফ্লাইট কন্ট্রোলারের হিসাবে ভুল থাকায় মহড়াই অংশ নিয়ে বিমান গুলোর জ্বালানি মাঝপথেই শেষ হয়ে গিয়েছিল, আর ম্যারিনার মডেলের বিমানটিতে সম্ভবত যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আগুন ধরে গিয়েছিল।
অগ্নিকাণ্ডে বিমানটি সাগরে বিধ্বস্ত হয় এরপর দুর্ঘটনা স্থানের আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ হয়ে ওঠায় দীর্ঘস্থায়ী তল্লাশি অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো দুর্ঘটনার পর ৭৫ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনা কবলিত ছয়টি বিমানের ধ্বংসাবশেষের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
বারমুডা কোন মহাদেশে
বারমুডা কোন মহাদেশ এটি লিখে অনেকেই বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে থাকেন এটি হ্যাটেরাস উপদ্বীপের ১,০৭০ কিমি পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে (কেপ হ্যাটেরাস), উত্তর ক্যারোলিনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কিউবার ১,৭৫৯ কিমি উত্তর-পূর্বে এবং নোভা স্কটিয়া, কানাডার কেপ সেবল দ্বীপ থেকে ১,২৩৬ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত। দ্বীপরাষ্ট্রটির রাজধানী হ্যামিলটন।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল অফ ইন্ডিয়া
আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতো, ভারতের ওডিশার অমরদা রোড বিমানবন্দর, ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া এবং পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার পিয়েরডোবার কাছে তিনটি অঞ্চলকে সংযুক্ত করে, একটি কাল্পনিক বিন্দু সহ একটি ত্রিভুজাকার এলাকা রয়েছে। এই এলাকায় অনেক বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে।
People also ask:
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল কি এবং কোথায় অবস্থিত?
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নামে পরিচিত নামের সাথে ট্রাইংগেল বা ত্রিভুজ থাকার কারণ।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের উপর দিয়ে কি বিমান চলে?
হ্যাঁ, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের উপর দিয়ে নিয়মিত বিমান চলাচল করে,বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যময় খ্যাতির কারণে অনেকে মনে করেন যে এই এলাকা দিয়ে বিমান উড়ানো অত্যন্ত বিপজ্জনক। কিন্তু বাস্তবতা হল, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের উপর দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য বিমান নিরাপদে উড়ে যায়।বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল একটি বড় এলাকা এবং এর মধ্য দিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিমানপথ অতিক্রম করে।
বারমুডা কি আমেরিকার কাছে?
না, বারমুডা আমেরিকার অংশ নয়। বারমুডা ব্রিটিশ উপনিবেশ, যার অর্থ এটি ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের অধীনে স্বায়ত্তশাসিত। বারমুডার নিজস্ব সরকার, আইন এবং মুদ্রা রয়েছে।তবে, বারমুডা আমেরিকার কাছে অবস্থিত। এটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে, মায়ামির পূর্বে, পোর্টো রিকোর উত্তরে এবং বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত।
পৃথিবীর ইতিহাসে আরল সাগরের বয়স কত বছর?
প্রায় ১২ হাজার বছর আগে সৃষ্ট এই আরাল সাগর বিংশ শতকের মধ্যভাগে শুকিয়ে যাওয়া শুরু করে।এই অঞ্চলের বাকি অঞ্চলের মতো আরাল সাগর ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সোভিয়ত সাম্রাজ্যের অংশ ছিল।
আড়াল সাগর কোথায় অবস্থিত?
কাজাকস্তানে অবস্থিত সাবেক আরাল সাগরের উত্তর প্রান্তটি সংরক্ষণে এক যৌথ প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক এবং কাজাক সরকার।
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করছি আর্টিকেলটি থেকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল সম্পর্কে এবং আরাল সাগর সম্পর্কে অজানা রহস্যের জট কিছুটাও হলেও উন্মোচিত করতে চেষ্টা করেছি। এরকমই তথ্যবহুল আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত পাবলিস্ট হয়ে থাকে আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে এবং অনেক উপকারে আসবে তাই নিয়মিত ভিজিট করার অনুরোধ রইলো।
পোস্ট ট্যাগ-
বারমুডা ম্যাপ,বারমুডা ট্রায়াঙ্গল অফ ইন্ডিয়া, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল,বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বই, বারমুডা ক্রিকেট দল, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল কোন সাগরে অবস্থিত,হ্যামিল্টন বার্মুডা,বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বই, বারমুডা ম্যাপ, মারিয়ানা ট্রায়াঙ্গেল, পৃথিবীর বৃহত্তম হ্রদের নাম কি, পৃথিবীর হ্রদ সমূহ সির দরিয়া, হ্রদ ও উপহ্রদ এর পার্থক্য, হ্রদের শ্রেণীবিভাগ।