নাপাক অবস্থায় কি কি কাজ করা যাবে না রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে গোসলের নিয়ম কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় ও সহবাসের পর সেহরি খাওয়া যাবে কিনা এবং রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে গোসলের নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানতে পারবেন। অনেকে আবার এটিও জানতে চাই যে ফরজ গোসল না করলে কি নামাজ হবে কি না।
তাহলে আমরা আজকের আলোচনায় জানবো ফরজ গোসল দেরিতে করা যাবে কিনা এবং ফরজ গোসল না করার শাস্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে, এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ে থাকলে এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পাবেন বলে আশা করছী।
ভূমিকা | রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে গোসলের নিয়ম | কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয়
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলের আলোচনায় থাকছে কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় এবং রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে গোসলের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত। এছাড়াও ফরজ গোসল দেরিতে করা যাবে কিনা নাপাক অবস্থায় কি কি করা যাবে না। এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
আরো থাকছে ফরজ গোসল না নামাজ হবে কি না এ বিষয়গুলোর উপর বিস্তারিত আলোচনা। যা হাদিসের আলোকে সম্পূর্ণ বর্ণনা করার চেষ্টা করব, আশা করছি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি উপকৃত হতে পারবেন।
সহবাসের পর সেহরি খাওয়া যাবে কি এই সমস্ত বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেতে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করছি এ সম্পর্কে আপনার মনে থাকা সকল প্রশ্নের উত্তরগুলো বিস্তারিত জানতে পারবেন ইনশাল্লাহ।
ফরজ গোসল দেরিতে করা যাবে কিনা
ফরজ গোসল দেরিতে করা যাবে কিনা এ বিষয়টি অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন, ফরজ গোসল দেরিতে করা যাবে। এই বিষয়ে কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে এবং ফরজ গোসল দেরিতে করলে বিশেষ করে মহিলাদের উপরে একটা সামাজিক প্রেসার আসে তা হল কোন জিনিস ধরা ছোঁয়ার ক্ষেত্রে তাকে অনেক কটু কথা শুনতে হয় এটা উচিত নয়।
গোসল ফরজ হওয়ার পরেও কোন কারনে গোসল দেরিতে করতে চাইলে তা সে করতে পারবে, কিন্তু সেক্ষেত্রে তাকে লজ্জাস্থান ভালো করে ধৌত করা এবং ওযু করে নেয়া সর্বোত্তম সুন্নাহ। কেউ যদি ফরজ গোসল দেরিতে করতে চাই সেক্ষেত্রে তার প্রথম কাজ হবে তাকে ভালোভাবে ওযু করে নিতে হবে, ওযু করে নেয়ার পর সংসারীক কাজকর্মগুলো করতে পারবে।
আবার কেউ যদি রাত্রের বেলা স্বামী-স্ত্রী সহবাসের পর ঘুমাতে চাই সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে ওযু করে তারপর ঘুমাতে হবে আর সব থেকে উত্তম হলো অবশ্যই গোসল ফরজ হওয়ার পর তাকে গোসল করে নেয়া অত্যন্ত ভালো।
কারণ গোসল ফরজ হওয়ার পর গোসল না করলে আল্লাহর বিশেষ রহমত থেকে বঞ্চিত হতে পারে, কিন্তু অন্যান্য সমস্যার জন্য দেরি করে গোসল করলে সেক্ষেত্রে কোন গুনাহ নেই।
ফরজ গোসল না করলে কি নামাজ হবে
অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে ফরজ গোসল না করলে কি নামাজ হবে? আপনার উত্তরটি হল গোসল ফরজ হওয়ার পর ফরজ গোসল না করলে কোন অবস্থাতেই আপনি নামাজ আদায় করতে পারবেন না। এমনকি যদি পানির ব্যবস্থা আছে তারপরেও গোসল ফরজ হয়ে যাওয়ার পর তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করতে চাইলে নামাজ আদায় করা যাবেনা।
সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে গোসল ফরজ হয়ে যাওয়ার পর নামাজ কিংবা কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে অবশ্যই গোসল করে তারপরে নামাজ আদায় এবং কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন।
এ থেকে বোঝা গেল যে গোসল ফরজ হয়ে যাওয়ার পর আপনি অন্যান্য সাংসারিক কাজ করতে পারবেন, কিন্তু নামাজ পড়া এবং কুরআন তেলাওয়াত করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে গোসল করে পরিপূর্ণ পবিত্রতা অর্জন করার পর নামাজ আদায় এবং কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন।
নাপাক অবস্থায় কি কি করা যাবে না
নাপাক অবস্থায় কি কি করা যাবে না এই প্রশ্নের জবাবে প্রথমে দেখতে হবে আপনার নাপাকির ধরনটা কি রকম। ওযু ছুটে গেছে সেই নাপাক, নাকি ফরজ গোসল ছুটেছে সেই নাপাক? যদি ওযু ছুটে যাওয়ার কারণে শরীর নাপাক হয়ে থাকে, তাহলে আপনি সব ধরনের ভালো কাজগুলো করতে পারবেন। ওযু ছুটে যাওয়ার কারণে শরীর নাপাক হয়ে থাকে তাহলে যে কাজগুলো করতে পারবেন না সে কাজ গুলো জেনে রাখুন।
নাপাক অবস্থায় কি কি করা যাবে নাঃ
- পবিত্র কুরআন শরীফ ধরতে পারবেন না
- নামাজ পড়তে পারবেন না
- কাবা ঘর তাওয়াফ করতে পারবেন না
কিন্তু যদি আপনার পবিত্র কোরআন মুখস্থ থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি পড়তে পারবেন। আর যদি ফরজ গোসল ছুটে যাওয়ার কারণে শরীর নাপাক হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি যে কাজগুলো করতে পারবেন না সে কাজ গুলো হলোঃ
- মসজিদে প্রবেশ করতে পারবেন না
- কাবা ঘর তাওয়াফ করতে পারবেন না
- নামাজ পড়তে পারবেন না
- পবিত্র কুরআন শরীফ ধরতে পারবেন না
আর যে সমস্ত কাজ গোসল ফরজ হয়ে যাওয়ার পরেও গোসল না করে শুধুমাত্র অজু করে করতে পারবেন সেই কাজগুলো হলোঃ
- জিকির আজগার করতে পারবেন
- মুখস্ত তেলাওয়াত করতে পারবেন
- কালিমা পাঠ করতে পারবেন
- ইস্তেগফার পাঠ করতে পারবেন
- দুরুদ শরীফ পাঠ করতে পারবেন
- ইসলামিক বই পুস্তক পড়তে পারবেন
- খাওয়া দাওয়া করতে পারবেন
- অন্যান্য সাংসারিক কাজকর্ম করতে পারবেন না
গোসল ফরজ হলে গোসল না করে শুধুমাত্র অজু করে আপনি এই কাজগুলো করতে পারবেন তবে আপনি চেষ্টা করবেন যত দ্রুত সম্ভব গোসল করে পবিত্রতা অর্জন করুন।
কারণ গোসল ফরজ হওয়ার পর গোসল না করে অপবিত্র অবস্থায় থাকলে মহান আল্লাহ তায়ালার বিশেষ কিছু রহমত থেকে বঞ্চিত হতে পারেন, তাই আপনি আল্লাহর রহমত থেকে বর্ধিত হতে না চাইলে অবশ্যই গোসল করার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা জরুরী।
কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয়
কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় এ বিষয়টা আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরি, কারণ ইসলামী শরীয়া মোতাবেক জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলোর গুরুত্ব অপরিসীম একজন মুসলিম সব সময় চাই পবিত্রতার সাথে জীবন যাপন করতে আর পবিত্র থাকাটাই ঈমানের একটি অঙ্গ।
তাই এসব বিষয়ে ধারণা রাখা ইহকাল এবং পরকালের ক্ষেত্রেও কল্যাণকর, কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় এ বিষয়টি আমরা বেশ কিছু হাদিস দ্বারা ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ, স্ত্রীলোকের নিকটবর্তী হলে অথবা স্ত্রীকে স্পর্শ করলে বা চুম্বন করলে কিংবা খারাপ কোন চিন্তা-ভাবনা করার কারণে উত্তেজনাই প্রাথমিক অবস্থায়
যৌনাঙ্গের অগ্রভাগ থেকে হালকা লালা জাতীয় যে পদার্থ বের হয় ইসলামী পরিভাষায় তাকে “মযী’ বলে, আর এই “মযী’ বের হলে গোসল ফরজ হয় না ওযু ভেঙ্গে যায়। সুতরাং ওই স্থান ধুয়ে ওযু করে নিলে যথেষ্ট।
(মিশকাত শরীফ-১ঃ৪০ পৃষ্ঠা ফতয়ায়ে রহমানিয়া-১ঃ১৮৬ পৃষ্ঠা) এই বিষয়ে হাদিসের একটি দলিল রয়েছে।
হযরত আবু আব্দুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন, আমার অধিক “মযী’ (হালকা বীর্য) বের হতো। (অপরদিকে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা (ফাতিমা) আমার স্ত্রী হওয়ার কারণে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে লজ্জা বোধ করলাম।
একদিন আমার পাশে বসা এক ব্যক্তিকে বললাম, এ বিষয়ে তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করো । তখন ওই ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন “মযী’ বের হলে শুধু ওযু করতে হবে (গোসল করার কোন প্রয়োজন নাই) । (নাসাঈ শরীফ,হাদিস নাম্বার-১৫২)
স্বামী স্ত্রী মিলনের সময় কিংবা অন্য কোন কারণে উত্তেজনার সাথে লজ্জাস্থান থেকে যে ঘন বীর্য বের হয় ইসলামী পরিভাষায় তাকে “মনি” বলে। এই “মনি” বের হলে তার ওপর গোসল ফরজ হয় । হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি অধিক “মযী’ সম্পন্ন লোক ছিলাম (অর্থাৎ প্রচুর “মযী’ বের হতো) ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, যখন তুমি “মযী’ বের হতে দেখবে, তখন তুমি তোমার লজ্জা স্থান ধুয়ে নিবে এবং নামাজে ওযুর ন্যায় ওযু করে নিবে। আর যখন তুমি উত্তেজনার সাথে পানি (মনি) বের করবে, তখন গোসল করে নিবে। (নাসাঈ শরীফ,হাদিস নাম্বার-১৯৩) ।
সহবাসের পর সেহরি খাওয়া যাবে কি
এখনো কথা বলব ছোট্ট একটি মাসআলা নিয়ে সহবাসের পর সেহরি খাওয়া যাবে কি এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ, নাপাক বা অপবিত্র অবস্থায় গোসল ফরজ হওয়া অবস্থায় যদি কেউ সেহরি খাই তাহলে তার রোজা হবে কিনা বা সিয়াম হবে কিনা এই সমস্ত বিষয়ে আমাদের অনেক ভাই বোন জানতে চান
যে গোসল ফরজ হয়ে গিয়েছে এমন অবস্থায় তিনি সেহরি খাচ্ছেন গোসল করতে গেলে হয়তো সেহরির সময় থাকবে না সময় শেষ হয়ে যাবে, এরকম পরিস্থিতিতে অনেকেই পড়ে থাকতে পারেন যে গোসল ফরজ হয়ে যাওয়ার পরেও গোসল না করেই কিংবা অজু না করেই যদি সেহরি খেয়ে নেয় তাহলে তার রোজা হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
তার রোজার কোনরকমই কোন সমস্যা হবে না, সমস্যা ছাড়াই তার রোজা হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। তবে একজন ঈমানদার ব্যক্তি ক্ষেত্রে অপবিত্র থাকা উচিত নয় সেটা ভিন্ন কথা ,রমজান মাসের সিয়াম শুদ্ধ হওয়ার জন্য পবিত্র অবস্থায় সেহরি খাওয়ার শর্ত কোরআন এবং হাদিসের কোথাও বলা হয়নি অতএব কেউ যদি যদি অপবিত্র অবস্থায় সেহরি খাই তাহলে তার সিয়াম হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
তবে মনে রাখতে হবে যে সেহরি অপবিত্র অবস্থায় খেয়ে ফেললাম সেটুক চললো, কিন্তু ফজরের সালাত যেহেতু আদায় করতে হবে সেহেতু ফজরের সালাতের আগে অবশ্যই তাকে গোসল ফরজ হলে গোসল, ওযু ফরজ হলে ওযু করে তারপরে ফজরের সালাত আদায় করতে হবে। নাপাক শরীর নিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করা যাবে না ।
কারণ সিয়াম রাখা যত গুরুত্বপূর্ণ তার চাইতে সালাত আদায় করার গুরুত্ব অনেক বেশি অতএব আমরা যদি অপবিত্র অবস্থায় সেহরি খেয়ে ফেলি তাহলে আমাদের রোজা হয়ে যাবে, কিন্তু ফজরের সালাত আদায় করার ক্ষেত্রে অবশ্যই পবিত্রতা অর্জন করে তারপরে নামাজ আদায় করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সঠিক শুদ্ধভাবে সিয়াম পালন করার তৌফিক দান করুক।
রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে গোসলের নিয়ম
রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে গোসল করার নিয়ম হল আপনি যত দ্রুত সম্ভব পবিত্রতা অর্জনের জন্য অবশ্যই আপনাকে ফরজ গোসল করার নিয়ম অনুযায়ী গোসল করতে হবে। ফরজ গোসল করার নিয়ম হলো বাথরুমে,গোসলখানায় অথবা পুকুরে গিয়ে প্রথমে কাপড় কিংবা শরীরের যে জায়গাতে নাপাকি লেগেছে সেই জায়গাটি ভালোভাবে ধুয়ে নেয়া,
তারপরে নামাজের জন্য ওযু করার মত ওযু করে নেয়া, শুধু পা ধোয়া ব্যতীত তারপরে সমস্ত শরীর ধৌত করা, এমনভাবে শরীর ধুতে হবে যেন শরীরের সমস্ত অংশে পানি পৌঁছে যায়। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে কোন জায়গায় যেন শুকনা না থাকে সমস্ত জায়গা যেন ভিজে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তারপর সমস্ত শরীর ভালো করে ধোয়া হয়ে গেলে দুই পা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে তাহলে আপনার ফরজ গোসল করা সম্পূর্ণ হয়ে গেল। রোজা অবস্থায় দুপুরে ঘুমানো দোষের কিছু নাই আর যখন আপনি ঘুমের মধ্যে থাকেন তখন আপনি সম্পূর্ণ নিষ্পাপ অবস্থাতে থাকেন তাই রোজা অবস্থায় যদি আপনার ঘুমের ভেতরে অনিচ্ছাকৃতভাবে স্বপ্নদোষ হয়ে যায়
সে ক্ষেত্রে আপনার রোজা কোন সমস্যা হবে না, আপনার রোজা হয়ে যাবে।কিন্তু কেউ কেউ মনে করেন যে রোজা অবস্থায় যদি স্বপ্নদোষ হয়ে যায় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে এই ধারণাটি পুরোপুরি ভুল।আবু সাঈদ খুদরি (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তিনটি জিনিস রোজা ভঙ্গের কারণ নয়
- বমি হওয়া
- শিঙ্গা লাগানো
- স্বপ্নদোষ হওয়া
উম্মুল মু’মিনীন উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, আবু তালহার (রাঃ) এর স্ত্রী সুলাইম (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল আল্লাহ তা’আলা সত্যের বিষয়ে নিষ্ককুষ, আমার জিজ্ঞাসা এই যে কোন নারীর স্বপ্নদোষ হলে তার গোসল করা কি ফরজ হয়? এর উত্তরে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন
হ্যাঁ অবশ্যই ফরজ যদি সে পানি ভেজার মত দেখতে পাই। এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে ছেলে মেয়ে উভয়ের স্বপ্নদোষ হতে পারে এবং এই স্বপ্নদোষ মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে তাই স্বপ্নদোষ হলে রোজার কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু স্বপ্নদোষ হয়েছে তা বোঝার সাথে সাথেই গোসল করে পবিত্রতা অর্জন করা সব থেকে ভালো। কারণ পবিত্র অবস্থায় থাকলে তার ওপরে মহান আল্লাহ তাআলার বিশেষ রহমত নাযিল হতে থাকে।
রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমু দেওয়া যাবে
রোজা রেখে স্ত্রীকে আলিঙ্গন করা কিংবা রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমু দেয়া যাবে কিনা এই বিষয়ে হাদিস থেকে স্পষ্ট ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। রোজা রেখে স্ত্রীর সাথে আলিঙ্গন করলে কিংবা চুমু দিলে কিংবা স্পর্শ করলে রোজা ভঙ্গ হয় না। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমু দিয়েছেন এবং আলিঙ্গন করেছেন।
আমাজন আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা অবস্থায় স্ত্রীদেরকে চুমু দিয়েছেন এবং আলিঙ্গন করেছেন। আমাজন আয়েশা (রাঃ) তিনি আরো বলেন কিন্তু আপন জৈবিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন তোমাদের চেয়ে অধিক নিয়ন্ত্রণকারী, বুখারী এবং মুসলিম শরীফের হাদিস।
FAQ | কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় | সহবাসের পর সেহরি খাওয়া যাবে কি
পাতলা বীর্য বের হলে কি গোসল ফরজ হবে?
যৌনাঙ্গের অগ্রভাগ থেকে হালকা লালা জাতীয় যে পদার্থ বের হয় ইসলামী পরিভাষায় তাকে “মযী’ বলে, আর এই “মযী’ বের হলে গোসল ফরজ হয় না ওযু ভেঙ্গে যায়। সুতরাং ওই স্থান ধুয়ে ওযু করে নিলে যথেষ্ট।
পাতলা বীর্য বের হলে কি নামাজ পড়া যাবে?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, যখন তুমি “মযী’ বের হতে দেখবে, তখন তুমি তোমার লজ্জা স্থান ধুয়ে নিবে এবং নামাজে ওযুর ন্যায় ওযু করে নিবে। আর যখন তুমি উত্তেজনার সাথে পানি (মনি) বের করবে, তখন গোসল করে নিবে। (নাসাঈ শরীফ,হাদিস নাম্বার-১৯৩) ।
নাপাক অবস্থায় বই পড়া যাবে কি?
নাপাক অবস্থায় কি কি করা যাবে না এই প্রশ্নের জবাবে প্রথমে দেখতে হবে আপনার নাপাকির ধরনটা কি রকম। ওযু ছুটে গেছে সেই নাপাক, নাকি ফরজ গোসল ছুটেছে সেই নাপাক? যদি ওযু ছুটে যাওয়ার কারণে শরীর নাপাক হয়ে থাকে, তাহলে আপনি সব ধরনের ভালো কাজগুলো করতে পারবেন। ওযু ছুটে যাওয়ার কারণে শরীর নাপাক হয়ে থাকে তাহলে যে কাজগুলো করতে পারবেন না সে কাজ গুলো হলোঃ
- পবিত্র কুরআন শরীফ ধরতে পারবেন না
- নামাজ পড়তে পারবেন না
- কাবা ঘর তাওয়াফ করতে পারবেন না
শেষ কথা। কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয়
প্রিয় পাঠক, আজকের এই হাদিস দ্বারা আলোচনা থেকে অবশ্যই আপনারা বুঝতে পেরেছেন হয়তো, রোজা অবস্থায় আপনার এই সমস্যাগুলো হলে সিয়াম সাধনার উপর কতটুকু প্রভাব পড়তে পারে সে বিষয়ে। আজকের আলোচনা থেকে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন
তাহলে অবশ্যই পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো, যেন তারাও এই বিষয়গুলো পড়ে উপকৃত হতে পারে সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের মত এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন আসসালামু আলাইকুম।
কতটুকু বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় বিস্তারিত ভিডিও দেখুন