মুখের দুর্গন্ধ এই সমস্যায় বাংলাদেশের ২৫% মানুষ এই সমস্যার সম্মুখীন, মুখের দুর্গন্ধ কেন হয় এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ১৫টি ঔষধের নাম গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।সে বিষয়গুলো নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব। এ বিষয়গুলো জানলে মুখে দুর্গন্ধ দূর করার জন্য অনেক সহায়ক হবে। মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার অনেক গুলো কারণ রয়েছে।
মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে।দুর্গন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে মুখ শুকিয়ে যাওয়া। মুখ শুকিয়ে গেলে মুখে লালা আসে না যার ফলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে । এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আজকে আপনারা জানতে পারবেন,কি করলে আপনাদের মুখের দুর্গন্ধ দূর হবেনা এবং কেন মুখে দুর্গন্ধ হয়।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক,মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঔষধের নাম এবং কেন মুখের দুর্গন্ধ হয়।এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।মুখে দুর্গন্ধ দূর করার পদ্ধতি জানার আগে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে কি কারণে আমাদের মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। এ বিষয়গুলো আমরা বিস্তারিত জানব।
মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে ।এর মধ্যে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসও দায়ী সে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বিস্তারিত আজকে আলোচনা করব।আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।আশা করছি এই পোস্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।
মুখের দুর্গন্ধ কেন হয়
মুখে দুর্গন্ধের সমস্যাই অনেকে ভুগেন, মুখের দুর্গন্ধ কেন হয় আর কি করলে মুখে দুর্গন্ধ দূর হবে না চলুনবিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। প্রথম কারণ মুখ শুকিয়ে যাওয়া,আমাদের মুখের ভেতরটা সাধারণত ভেজা থাকে।যার কারণে সারাক্ষণই মুখের ভিতরে লালা আসতে থাকে এই লালা আমাদের বেশ কয়েকটি উপকার করে।
আরো পড়ুনঃ সেনসোডাইন টুথপেস্ট এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
যেমন মুখ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ছোট ছোট খাদ্য কণা মুখ থেকে সরাই এবং যেসব জিনিসের কারণে মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হয় সেগুলো সরাই। কিন্তু যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে মুখের লালা না থাকে তখন মুখ শুকিয়ে যায় যার ফলে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।যেমন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলে আমাদের মুখে যে একটু দুর্গন্ধের মত হয় সেটাই মুখ শুকিয়ে যাওয়ার জন্য হয়।
কারণ ঘুমের সময় মুখে খুব কম পরিমাণে লালা আসে।মুখ যাতে শুকিয়ে না যায় সেজন্য কি কি করা যেতে পারে?এজন্য খুব সহজ কয়েকটা উপায় আছে।যেমনপর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া,শরীরে যদি পানি শূন্যতা হয় তখন মুখে লালার পরিমাণও কমে যায়।অনেক বেশি চা কফি সফট ড্রিংক খাবেন না এগুলোতে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ লাল টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
এমন খাবার খাবেন যেগুলো বেশি বেশি চাবাতে হয়,যেমন শসা গাজর আপেল এই জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে মুখে লালা আসবে। চুইনগাম চাবাতে পারেন সেটাও মুখে লালা আনতে সাহায্য করে চিনি ছাড়া যে সব চুইংগাম পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন চিনি ছাড়া কেন সেটা পরের পয়েন্টে বুঝিয়ে বলছি।
মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার দ্বিতীয় কারণে চলে আসি,অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আমরা যা খাচ্ছি তা অনেকভাবে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে সাহায্য করতে পারে।আমি দুইটা বিষয় তুলে ধরব প্রথম টা হল চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় এগুলো যতটুক সম্ভব এড়িয়ে চলুন।আপনি বলতে পারেন কেন? চলুন তাহলে তা বুঝিয়ে বলি।
চিনি আছে এমন কিছু খাবার আপনি যখন খাবেন তখন দাঁতের ওপরে চিনিযুক্ত খাবারের কনা লেগে থাকে। সে চিনি হজম করার কাজে লেগে পরে আমাদের মুখের ভিতরে থাকা অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া,এ সময় কিছু এসিড উৎপাদন হয় যা গিয়ে দাঁতকে আক্রমণ করে। বারবার এমন হতে থাকলে দাঁতের বাইরের আবরণ ক্ষয় হয়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ দাঁতের জন্য ভালো টুথপেস্ট কোনটি
এবং দাঁতে ছোট ছোট গর্ত দেখা যায়।এখন এই ছোট ছোট গর্তে মুখে দুর্গন্ধ তৈরি করে এমন ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু থাকার জায়গা পেয়ে যায়। তখন সেই চিপা থেকে দাঁত ব্রাশ করে বা ক্লাস করেও এগুলোকে বের করা দুরূহ হয়ে পড়ে,যার ফলে মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হয়।অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থাকলে আরেকটা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সেটা হল অপুষ্টি শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিলে এই মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। সুষম খাদ্যভাস আপনার শরীর সুস্থ রাখবে মুখের দুর্গন্ধও দূরে রাখবে আপনি দিনে কি খাচ্ছেন সেটা একটু খেয়াল করবেন।বেশি বেশি শাকসবজি ও ফলমূল খাবেন,এগুলোতে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল থাকে বিভিন্ন ধরনের ও বিভিন্ন রঙের শাক সবজি।
আর ফল খাওয়ার চেষ্টা করবেন,যে সিজনে যা সুলভ মূল্যে পাওয়া যায় সেগুলোই বেশি বেশি খাবেন। মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার পরের কারণে চলে আসি,এটা খুবই কমন – মুখের ভেতরটা ঠিকমতো পরিষ্কার না রাখা।ভালোভাবে পরিষ্কার না করলে মুখের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট খাদ্য কনা আটকে থাকে,যেমন জিব্বার উপরে দুই দাঁতের মাঝখানে মাড়ি আর দাঁতের মাঝখানে।
আরো পড়ুনঃ শারীরিক সমস্যা দূর করার পুষ্টিকর খাবার
আমাদের মুখের ভেতরে যে জীবাণু গুলো থাকে সেগুলো তখন এই কোনায় কোনায় আটকে থাকা খাদ্য কনা ভাঙতে শুরু করে সেখান থেকে কেমিক্যাল নিঃসরণ হয় যা থেকে মুখের দুর্গন্ধ তৈরি হয়।এটা ঠেকাতে মুখের ভেতরটা খুব যত্ন নিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করলে অনেক ক্ষেত্রেই আপনার মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা কমে যাবে।কিভাবে করবেন চারটা উপায়ের কথা বলছি, প্রথম উপায় সবাই জানেন,কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা করা হয়ে ওঠে না।সেটা হলো প্রতিদিন দুইবার দাঁত মাজা প্রতিবার অন্তত দুই মিনিট ধরে দাঁত মাজবেন।
আর দাঁত মাজার জন্য ক্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্ট ব্যবহার করবেন কারণ ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয় ঠেকাতে সাহায্য করে।বেশিরভাগ টুথপেস্টেই এখন ফ্লোরাইড থাকে তা আর্টিকেলটি পড়া শেষে একবার গিয়ে চেক করে নিতে পারেন যে আপনার টুথপেস্ট ফ্লোরাইড আছে কিনা।আর দাঁত মাজার সময় দাঁতের ভেতর পাশ বাইরের পাশ যে পাশ দিয়ে খাবার।
আরো পড়ুনঃ শরীর গরম থাকা থাকার লক্ষণ
চাবাচ্ছেন সব দিক পরিষ্কার করবেন।দ্বিতীয় নাম্বার কাজটা আমরা সচরাচর করি না,সেটা হলো দুই দাঁতের মাঝখানের জায়গাটুকু প্রতিদিন পরিষ্কার করা।দেখা যায় দুই দাতের মাঝখানে মাংস আটকে গেলে সেটা টুথপিক দিয়ে খুটিয়ে বের করার চেষ্টা করি,তাছাড়া ওই জায়গায় আমরা খুব একটা মনোযোগ সাধারণত দেই না।
যার ফলে প্রতিদিন দাঁত মাজলেও এই জায়গাটা পরিষ্কার হয় না কারণ টুথব্রাশ দুই দাঁতের মাঝখানে জায়গায় পৌঁছাতে পারে না।তাহলে এখানে খুব ছোট ছোট খাবারের টুকরা আর জীবাণুর একটা আস্তরণ জমে যায় ফলে সেখান থেকে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।এই জায়গাটা পরিষ্কার করতে ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে পারেন।
৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে কিনতে পাওয়া যায়।চিকন সুতা বা তারের মতো একটা জিনিস এটা দিয়ে আলতো করে দুই দাঁতের মাঝখানে জায়গা পরিষ্কার করবেন বেশি জোরে ঘষবেন না তাতে মাড়ির ক্ষতি হতে পারে।আর যখন ফ্লস করা শুরু করবেন তখন প্রথম কিছুদিন মাড়ি থেকে একটু রক্ত যেতে পারে কিছুদিন পরেই সেরে যাবে
ডেন্টাল ফ্লস ছাড়াও ইন্টারডেন্টাল ব্রাশ ফ্লাসার দিয়ে দাঁতের মাঝখানটা পরিষ্কার করা যায়।সুযোগ থাকলে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন, তবে টুথপিক দিয়ে এই কাজটা করতে যাবেন না।কারণ টুথ পিক দাঁতের মাঝখানে ভালোভাবে পৌঁছাতে পারেনা আবার এতে মাড়ির ক্ষতি হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে যেখান থেকে ইনফেকশন হতে পারে।
এই যে দুইটা কাজের কথা বললাম প্রতিদিন দুইবার দাঁত মাজা আর একবার দাঁতের মাঝখানটা পরিষ্কার করা এগুলো করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কথা না।কিন্তু তারপরেও মুখেদুর্গন্ধ থাকলে মুখ পরিষ্কার রাখতে বাড়তি আরো দুইটা কাজ করতে পারেন,জিব্বা পরিস্কার করা আর মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা।
কারন আমাদের জিব্বায় বিশেষ করে পেছনের দিকে ব্যাকটেরিয়া জমে গিয়ে মুখে দুর্গন্ধ তৈরি করতে পারে। দিনে একবার আলতো করে জিব্বা পরিস্কার করবেন টাং ক্লিনার বা টাং স্ক্যাপার নামে একটা জিনিস কিনতে পাওয়া যায়৭০ থেকে ৮০ টাকা তেই কিনতে পাবেন সেটা দিয়ে জিব্বার পিছন থেকে সামনের দিকে পরিষ্কার করবেন।
আর মাউথওয়াশ ব্যবহার করে দেখতে পারেন এটাও মুখ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।আমি এখানে একদম সাধারন চারটা উপায়ের কথা বলেছি আশা করছি এগুলো ফলো করলেই আপনার সমস্যার সমাধান পেয়ে যেতে পারেন।এখানে আরেকটি বিষয় বলে রাখি,অনেক সময় মুখের দুর্গন্ধের জন্য আমরা কেবল।
মাউথওয়াশ চুইংগাম লজেন্স এগুলোর কথা চিন্তা করি কিছু একটা মুখে পুরে দিলাম আর গন্ধটা চলে যাবে।অনেক ক্ষেত্রে এগুলো সাময়িক একটা সমাধান দিতে পারে কিন্তু দুর্গন্ধ হওয়ার কারণটা খুঁজে বের করে সেটা সমাধান না করলে দুর্গন্ধ আবার ফিরে আসতে পারে।
মুখে দুর্গন্ধের জন্য কোন ৭টি শারীরিক সমস্যা দায়ী
এখন চলে আসি মুখে দুর্গন্ধের জন্য কোন ৭ টি শারীরিক সমস্যা দায়ী এবং অভ্যাসগুলো জড়িত কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ধূমপান, জর্দা , গুল ,শরীরের অনেক ধরনের ক্ষতি করার পাশাপাশি এটা কয়েকভাবে মুখের দুর্গন্ধ তৈরি করতে পারে।তামাক থেকে একটা দুর্গন্ধ আসে তামাক মুখটা শুকনো করে ফেলে।
আবার ধূমপাইদের মাড়িতে রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে সেখান থেকেও দুর্গন্ধ হতে পারে।আপনি যদি ধূমপান করেন আজকে থেকেই ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন,তাহলে দেখবেন মুখে দুর্গন্ধ সেরে যাওয়া সহজ আপনার স্বাস্থ্যের অনেক উপকারও হবে।আর তামাক যে কেবল সিগারেটের থাকে তা কিন্তু না।
বিভিন্ন প্রকারের জর্দা যেমন শুকনা জর্দা জাফরানি জর্দা ভেজা পাতি জর্দা গুল সাদা পাতায় এমনকি অনেক পান মশলাতেও তামাক থাকে, এগুলো খেলে সেখান থেকেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে,পাশাপাশি এগুলো মুখের ক্যান্সার গলনালির ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয। যাদের এসব খারাপ অভ্যাস আছে তারা দয়া করে ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন।
আর যাদের এই অভ্যাস নাই তারা এটা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেন।মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ মুখের ভেতরে রোগ মুখের ভেতরে যদি কোন রোগ থাকে যেমন দাঁতে ক্ষয় মাড়ির রোগ যে কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে ।একটু আগে বললাম কেমন করে দাঁতে ক্ষয় হলে সেই গর্তে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী জীবাণু লুকিয়ে থাকতে পারে।
তাদের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো ঘটতে পারে।মাড়ির কিছু রোগের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী জীবাণুগুলো লুকানোর ভালো জায়গা পেয়ে যায় আর মাড়ির রোগে সাধারণত ব্যথা হয় না তাই আমরা বুঝতেও পারি না যে মাড়িতে সমস্যা হয়েছে কিন্তু এই মাড়ির রোগের কারণে এক পর্যায়ে গিয়ে আমাদের দাঁতগুলো পড়ে।
যায় সমস্যার শুরুতেই একজন ডেন্টিস্ট দেখিয়ে নিলে সেটা হয়তো রোধ করা যেত। তাই নিজে নিজে চেষ্টা করার পরও যদি মুখে দুর্গন্ধ থাকে তাহলে একজন ডেন্টিস্টের কাছে যাবেন তিনি দেখিয়ে দিতে পারবেন আপনার দাঁত বা মাড়ির কোন রোগের কারণে মুখে দুর্গন্ধ হচ্ছে কিনা এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে পারবেন।
মুখের দুর্গন্ধ ছাড়াও মাড়ির রোগের আরো কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো দেখা দিলে আপনার ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া প্রয়োজন সেগুলো হচ্ছে মাড়ি থেকে যদি রক্ত যাই। অনেকেরই দাঁত ব্রাশ করার সময়ে মাড়ি থেকে রক্ত যায় এবং আমরা সেটাকে তেমন পাত্তা দেয় না।কিন্তু এটা মাড়িতে রোগের কারণ হতে পারে যার ফলে অকালের দাঁত পড়ে যেতে পারে।
মাড়ি যদি ফোলা হয়, মাড়িতে যদি ব্যথা হয় তার থেকে মাড়ি যদি সরে আসে বা যদি আলগা হয়ে আসে দাঁতে যদি ব্যথা হয়। মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ দাঁত ও মাড়ি ছাড়া শরীরের অন্যান্য রোগ নাকের ইনফেকশন টনসিলের রোগ শ্বাসতন্ত্রের রোগ পাকস্থলীর সমস্যায় ইত্যাদি থেকেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।
এবং কিছু ওষুধের কারণেও মুখ শুকিয়ে যেতে পারে এবং যেখান থেকে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং তিনি কারণটা খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী আপনাকে চিকিৎসা দিতে পারবেন। মুখে দুর্গন্ধের জন্য দায়ী নিচে বর্ণিত সাধারণ সাতটি শারীরিক সমস্যাগুলি হল
- ডায়বেটিস
- সাইনাসের সংক্রমণ
- কিটোসিস
- টনসিলের সংক্রমণ
- জেরোস্টোমিয়া
- কিডনি রোগ
- অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা
ডায়বেটিসের কারণে রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে, জীবাণুগুলি শরীরের টিস্যুগুলিকে দ্রবীভূত করতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াটি অ্যামোনিয়া গন্ধের সৃষ্টি করে।সাইনাসের সংক্রমণের কারণে নাকের মধ্যে মিউকাস জমে যেতে পারে। এই মিউকাসে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি হতে পারে, যা দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে।
কিটোসিস হল একটি অবস্থা যেখানে দেহ শর্করার পরিবর্তে চর্বিকে শক্তির উৎস হিসাবে ব্যবহার করে। এই প্রক্রিয়াটি অ্যাসিড তৈরি করে যা মুখের দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে।টনসিলের সংক্রমণের কারণে টনসিলে পচা মাংসের মতো দুর্গন্ধ হতে পারে।জেরোস্টোমিয়া হল মুখের শুষ্কতা।
মুখের শুষ্কতা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধির জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে, যা দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে।কিডনি রোগের কারণে রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এই বিষাক্ত পদার্থগুলি মুখের দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে।
মুখে দুর্গন্ধের অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD), অ্যাসিড রিফ্লাক্স, এবং খাদ্যনালীর ক্যান্সার।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার টুথপেস্ট
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার টুথপেস্ট এর মধ্যে বিভিন্ন উপাদানের টুথপেস্ট পাওয়া যায়। এই টুথপেস্টগুলিতে সাধারণত নিম্নলিখিত উপাদানগুলি বিদ্যমান থাকে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার টুথপেস্ট | ব্যবহার |
---|---|
টুথপেস্টের নাম | নির্দেশনা চিহ্ন |
ডাবর রেড টুথপেস্ট | |
ম্যাজিক টুথপাউডার | |
ম্যাজিক হারবাল টুথপেস্ট | |
কোলগেট টোটাল ফ্রেশ মিন্ট স্ট্রাইপ জেল | |
মেডিপ্লাস টুথপেস্ট | |
কোলগেট হারবাল টুথপেস্ট | |
হোয়াইট প্লাস টুথপেস্ট |
ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয় রোধে সাহায্য করে।ক্লোরিহেক্সিডিন একটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে ব্যাকটেরিয়া দূর করে।সোডিয়াম লাউরিল সালফেট (SLS) SLS একটি সাবানিং এজেন্ট যা টুথপেস্টকে ফোম-ফেনা তৈরি করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
পেপারমিন্ট অয়েল এই উপাদান টি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক যা মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য কিছু কার্যকর টুথপেস্টের মধ্যে রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম হলো Colgate Total Advanced Whitening Toothpaste এই টুথপেস্টে ফ্লোরাইড, ক্লোরিহেক্সিডিন, এবং SLS এই উপাদানগুলি রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্টের তালিকা
এটি দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে,মুখের দুর্গন্ধ দূর করে, এবং দাঁত সাদা করে দাঁতের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।Oral-B Pro-Expert Complete Toothpaste এই টুথপেস্টিতে ফ্লোরাইড, পেপারমিন্ট অয়েল এবং SLS মত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।এই উপাদানটি দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে, মুখের দুর্গন্ধ দূর করে,এবং দাঁত ব্রাশ করা সহজ করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
Sensodyne Repair & Protect Toothpaste এই টুথপেস্টে ফ্লোরাইড, পেপারমিন্ট অয়েল, এবং SLS এর মত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। এটি দাঁতের ক্ষয় রোধ করে, মুখের দুর্গন্ধ দূর করে, এবং দাঁতের সেনসিটিভিটি-সংবেদনশীলতা কমাতে সাহায্য করে।
টুথপেস্টে যে উপাদান গুলো গুরুত্বপূর্ণঃ
- ফ্লোরাইড
- ক্লোরিহেক্সিডিন
- সোডিয়াম
- পেপারমিন্ট অয়েল
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঔষধের নাম
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য বাজারে অনেক ধরনের ঔষধ পাওয়া যায় মুখে দুর্গন্ধ দূর করতে কার্যকর মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঔষধের নাম জানা প্রয়োজন, মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া দূর করার জন্য এবং মুখের ভেতরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য কিছু জনপ্রিয় ঔষধের নাম হল ক্লোরিহেক্সিডিন (Chlorhexidine) এটি একটি অ্যান্টিসেপটিক উপাদান সমৃদ্ধ
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঔষধের নামঃ
সমস্যা | এলোপ্যাথিক ঔষধ | হোমিও ঔষধ |
মুখের দুর্গন্ধ | লিসটা কেয়ার | কার্বোভেজ |
মুখের দুর্গন্ধ | কুলমিন্ট | এসিড নাইট |
মুখের দুর্গন্ধ | ওরাকল | মার্কুরিয়াস সল |
মুখের দুর্গন্ধ | ওরোক্লিন | অরাম মেট |
মুখের দুর্গন্ধ | ওরোস্টার | সিফিলিনাম |
যা মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করে।মিথাইলসালিসিলেট (Methyl Salicylate) এই উপাদানটি অ্যান্টিসেপটিক যা মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করে এবং মুখের ভেতরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।সোডিয়াম বাইকার্বোনেট (Sodium Bicarbonate)এটি একটি অ্যান্টিসেপটিক উপাদান সমৃদ্ধ
যা মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করে এবং মুখের ভেতরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।বর্ণিত এই ঔষধগুলি সাধারণত মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করে।
তবে, মুখের দুর্গন্ধের মূল কারণ যদি অন্য কোন শারীরিক সমস্যার কারণে হয়ে থাকে তাহলে এই ঔষধগুলি কাজে আসার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তাই, মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা সমাধানের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই জরুরী।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার স্প্রে নাম
আমরা সাধারণত অনেকেই মুখের দুর্গন্ধ দূর করার স্প্রের নাম লিখে সার্চ করে থাকি।মুখের দুর্গন্ধ দূর করার স্প্রে নাম মাউথ স্প্রে নামে পরিচিত। বাংলাদেশে বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মাউথ স্প্রে পাওয়া যায়। তার মধ্যে নিচে বর্ণিত কিছু জনপ্রিয় মাউথ স্প্রে হলঃ
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার স্প্রে নাম | ব্র্যান্ড | দাম |
---|---|---|
YXMGC Bad Breath Freshening Mouth Spray | YXMGC | ২৭৬৭ টাকা |
Fresh Breath Freshener Oral Spray | Spearmint | ২৮৫ টাকা |
Freshbrust Mouthwash | Freshbrust | ২৫৫ টাকা |
Colgate Plax Freshmint Mouth Wash | Colgate | ৩০৭ টাকা |
এই স্প্রে গুলোতে সাধারণত অ্যালকোহল, লবণ, এবং অ্যান্টিসেপটিক এর মত উপাদান থাকে। অ্যালকোহল যা মুখের ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। লবণ মুখের লালা নিঃসরণ বাড়ায়, যা মুখের ভিতর পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে যা মুখের দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে এমন ব্যাকটেরিয়া দূর করে।
আরো পড়ুনঃ সারা মাস ব্যবহারের জন্য যে টুথপেস্ট গুলো
এছাড়াও বাংলাদেশের বাজারে কিছু দেশীয় মাউথ স্প্রেও পাওয়া যায়। এগুলো গুণ এবং মানের দিক থেকে অনেক ভালো এই স্প্রেগুলোতে সাধারণত অ্যালকোহল, লবণ, এবং বিভিন্ন ধরনের ভেষজ উপাদান থাকে। ভেষজ উপাদানগুলো মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এবং মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে কি করা উচিত?
দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবারের কণা এবং জীবাণু দূর করতে সকালে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই মিনিট ধরে ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করে ব্রাশ করুন।জিহ্বায় জীবাণু জমা হয়, যা দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। তাই ব্রাশ করার সময় জিহ্বার উপরের অংশও পরিষ্কার করুন।
মুখে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ কি?
দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন,পানিশূন্যতা মুখের দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। রসুন, পেঁয়াজ, মশলাদার খাবার এবং মিষ্টি খাবার কম খান।ধূমপান মুখের দুর্গন্ধের একটি প্রধান কারণ, তাই ধূমপান ত্যাগ করুন।
মেথি খেলে কি মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়?
একটি লবঙ্গ মুখে রেখে চিবিয়ে রস বের করে কিছুক্ষণ পরে থুতু ফেলে দিন অথবা কয়েকটি পুদিনা পাতা মুখে রেখে চিবিয়ে রস বের করে কিছুক্ষণ পরে থুতু ফেলে দিন।এক টুকরো লেবু মুখে রেখে চিবিয়ে রস বের করে কিছুক্ষণ পরে থুতু ফেলে দিন এতে করে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
FAQ
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে কি করা উচিত?
দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবারের কণা এবং জীবাণু দূর করতে সকালে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই মিনিট ধরে ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করে ব্রাশ করুন।জিহ্বায় জীবাণু জমা হয়, যা দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। তাই ব্রাশ করার সময় জিহ্বার উপরের অংশও পরিষ্কার করুন।
মুখে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ কি?
দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন,পানিশূন্যতা মুখের দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। রসুন, পেঁয়াজ, মশলাদার খাবার এবং মিষ্টি খাবার কম খান।ধূমপান মুখের দুর্গন্ধের একটি প্রধান কারণ, তাই ধূমপান ত্যাগ করুন।
মেথি খেলে কি মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়?
একটি লবঙ্গ মুখে রেখে চিবিয়ে রস বের করে কিছুক্ষণ পরে থুতু ফেলে দিন অথবা কয়েকটি পুদিনা পাতা মুখে রেখে চিবিয়ে রস বের করে কিছুক্ষণ পরে থুতু ফেলে দিন।এক টুকরো লেবু মুখে রেখে চিবিয়ে রস বের করে কিছুক্ষণ পরে থুতু ফেলে দিন এতে করে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনাদের এই তথ্যগুলো অনেক উপকারে আসবে এবং যেকোনো ধরনের ওষুধ সেবন করার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।এবং দাঁতের কোন ধরনের বড় সমস্যা হলে অবশ্যই ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট করবেন। অন্যথায় আপনার অবহেলার জন্য আপনার বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
পোস্ট ট্যাগ-
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঔষধের নাম,স্থায়ীভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়,মেয়েদের মুখে গন্ধ,মুখে দুর্গন্ধের জন্য কোন ৭টি শারীরিক সমস্যা দায়ী,পেট থেকে দুর্গন্ধ,মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়,মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার,মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য কোন ডাক্তার দেখাতে হবে
- মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় নিয়ে ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন